Wednesday, June 30, 2010

Love

"You must first have a good relationship with yourself before you can have a good relationship with others. You have to feel worthwhile and acceptable in your own eyes. The more independent you are, the better you'll be able to connect
and relate with others."

Love

When you choose to become more, you are choosing to go on the greatest adventure of your life. We are taught that need something or SOMEONE outside ourselves to be happy. This is the greatest misunderstanding of our time. Seek all you want, eventually you will find that everything and anything you are looking for is within you. Become you own soulmate, partner in crime and best friend. When you do, you will attract all that and more into your life.

Tuesday, June 8, 2010

ঝড়

তপ্ত প্ররেম নীরে আজি যমুয়ানা তীরে যৌবন ঝড়ের মাতন ।
শুষক ফুল দলে শিহর পুলকে অধীরা খুশীর নাচন ।।
বিহগী চাতকী শূক্তি বরষে হরষে মুক্তি
হৃদয় গুহায় প্রেমের পরশে জাগিছে আনন্দ- কাঁপন ।।
রঙ ধনু শাড়ী আকাশের গায়
জোছনা অমিয় ফল্গু ধারায়
মাতাল বাতাস সুরে অসীম দিগন্ত পুরে
প্রেমের ঢল উথাল পাথাল এসেছে মিলন লগন ।।
আলিপুরদুয়ার, ২৪/৪/১৯৮৩

অভিমান

[ ওগো] অকরুন অকারনে অভিমানে দেখা দিয়ে গেলে সরে ।
আশার মুকুল না ফুটিতে হায় ডুবিলে নীরব আঁধারে ।।
[তব] চরন ধুলার পরাগ মাখিয়া
স্মৃতির বাসরে একেলা জাগিয়া
ক্লান্ত নয়ন বিরহী পরান কাঁদিছে আকুল সুরে ।।
কন্ট মালার স্বপ্ন আমার ভাঙ্গিল উতলা ঝড়ে
মেঘ মিনারে অঞ্জন তীরে মিছে খুঁজি আজ বঁ্ধুরে
শুধু একবার বলে যাও প্রিয়া
কোন দোষে হায় রেখেছো ফেলিয়া
শূন্য মরুর দহন জ্বালা মোর শেষ হবে কোন ভোরে ।।
আলিপুরদুয়ার, ২৪/৪/১৯৮৩

মলয় বাতাস

আজ দখিন সমীরনে কার বারতা কে জানে ।
গোবির গভীর মন বনে খুশীর মাতন সঙ্গোপনে ।।
অনুরাগ ফুল রথে প্রেম অঞ্জন আঁখি পাতে
সুধা-সুরতি অঙ্গে মাখিয়া আসিবে বঁধু বিজনে ।।
অঙ্গনে তাই ফুল্ল পাপিয়া মিলন মধুর সুরে
গেয়ে ওঠে গান, চম্পা যুথি মালতীর হাসি ঝরে,
উদাস আকাশ আজি নব রুপে ওঠে সাজি
সাঁঝের প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখে নিশীথিনী শত যতনে ।।
আলিপুরদুয়ার, ২৪/৪/১৯৮৩

বন্ধু

বন্ধু যদি না হও সখা শত্রু হয়েই থেকো ।
কন্ঠ মালা নাই বা হলাম চরন তলে রেখো ।।
করুনা তিলক আমার ভালে স্নেহের পরশে নাই পরালে,
[তোমার] চলা পথের ধূলিকনায় সোহাগ রেনু মেখো ।।
বাঁশরীর সুর বাতাসের কানে,
হাসির ঝলক নীল গগনে
মোর বাতায়নে নিদাঘ দিনে ক্লান্তি আবেশে তৃষি্ত নয়নে
শুধু একবার আসিও বন্ধু বলেই ডেকো ।।
আলিপুরদুয়ার, ২৩/৪/১৯৮৩

ঝাউ

একাকীনি এ নিশিথে ঝাউ বঁধূ
বলো বলো কার তরে,
নিবিড় আঁধারে কার পথ চেয়ে
নয়নে বাদল ঝরে ?
উদাসী উপোসী দখিনা বাতাস
এলোচুলে বাঁধে সুখের আবাস
হৃদয় উত্তাপে সবুজ বসন
শুকাইছে বারে বারে ।।
কাহারে স্মরিয়া উঠিছো দুলিয়া
আনন্দ কান্নায় হেলিয়া ফুলিয়া
কোন সে নিঠুর বলো কত দূরে
তোমারই মত কাঁদে সুরে সুরে
আধীর নয়নে রয়েছে চাহিয়া
সীমান্তের কারাগারে ।।
ম্যাল, ১৭/৪/১৯৮৩

ঊষা

কে যেন কানে কানে কহিল তাহারে
জাগো ওঠো বাহিরে তব গৃহ দ্বারে ,
ক্লান্ত নিশীথিনী রয়েছে দাঁড়ায়ে
বিষাদ কুয়াশা বসন জায়ে
প্রতীক্ষার অবসানে – বিদায় মাগে রে ।।
শিথিল সবুজ চাদর সরায়ে অবশ হাতে
নব বঁধূ বুঝি চাহিল সলাজ আঁখি পাতে
স্নিগ্ধ মধুর হাসির প্লাবন
পাহাড় চুড়ায় তোলে আলোড়ন
সহসা ঘন কুয়াশা আধারে
ডুবে গেল ঊষা দিনের দিশা নাম না জানা পাহাড়ে ।।
টাইগারহিল, ১৭/৪/১৯৮৩

সকাল

মেঘের দোলা চেপে অপরুপ বেশে
ফাগ মাখা অরুনি এলে তুমি হেসে ।
অতৃপ্ত ঘুমের আবেশ শিথিল এলোকেশ
লাজ রাঙ্গা আননে এলে নিশি শেষে।।
হাসির মূক্তা ঝরে বিশ্ব চরাচরের
আঁধার গিয়েছে সরে অন্ধ অন্তপুরে
বাহারী আঁচল বিছিয়ে করমের আলপনা দিয়ে
তোমার অভিসার দিবসের বেশে।।
টাইগার হিল, ১৭/৪/১৯৮৩

Monday, June 7, 2010

দারজিলিং

হে উদাসী রূপসী তাপসী ধন্যা নিরুপম হিম কন্যা ।
স্বপন-চারিনী চঞ্চল-চরনী চির রহস্যময়ী অনন্যা ।।
ধবল কিরিটি মাথায় পরিয়া তুমি
এলোকেশের বাহারে দিগন্ত চুমি,
রাজেন্দ্রানী বেশে দাঁড়ায়ে রয়েছো অনন্ত ধ্যান-নিমগ্না ।।
সহসা নিমেষে রূপের ছটায় বিচিত্র মোহিনী সাজে
ধরা দিয়ে পালিয়ে যাও নিয়ত আমার নয়ন মাঝে
তব শীতল অঙ্গে উষ্ণতা সুখ খুঁজি
মাতাল পাগল দশ দিশি আজ বুঝি
তোমার দুরবার টানে কি যাদু মাখা হয় নি হবে না জানা ।।
দারজিলিং , ১৬/৪/১৯৮৩

দারজিলিং

অনেক দিনের স্বপন কাঁজলে এঁকেছি তোমার ছবি।
মায়াবী রূপসী হে রহস্যময়ী গিরি-তনয়া গরবী ।।
তোমার নিকুঞ্জ পথে অভিসারে যেতে যেতে
যতনে সাজানো মরন মালায় উল্লাসে নাচে সবি ।।
হাজার বাঁধার প্রাচীর তোমায় প্রহেলিকা হয়ে ঘিরিয়া রয়
দেখা দিয়ে বারে বারে ডুবে যাও নিবিড় আঁধারে
হারায়ে খোঁজার লুকোচুরি মাঝে পরশ তোমার লভি ।।
দারজিলিং, ১৬/৪/১৯৮৩

আমন্ত্রন

মলয়ার সাথে সুরভি হয়ে আসিও বিজনে গোপনে।
আঁখির কপাট বন্ধ যখন রবে মগন স্বপনে ।।
আঁধার জড়ায়ে দিবা অবসানে
আসিও শ্যামল চঞ্চল চরনে
বাহির ভূবন হলে অচেতন তুমি এসো মন উপবনে ।।
বাঁশরীর সুর হৃদয় বীনায় ওঠে যেন নব তান,
বিরহ বেদনায় আঁশার নিশি হোক চির অবসান
পাতার মরমরে নুপুর ধ্বনি বারতা তোমার যেন হে শুনি
জোছনার হাসি ওঠে ঝলকিয়ে তৃষি্ত ঊষর কাননে ।।
ম্যাল, ১৪/৪/১৯৮৩

পূরনিমা রাত্রি

বিশৃংখল অত্যাচারিত বাসী বিছানার মত
পাহাড়টা অফহোরে ঘুমিয়ে আছে – হাজার স্মৃতির ক্ষত
বুকে এঁকে । নিষপেষনে বেরিয়ে আসা তোষকের তুলোগুলো
হাসির মূক্তা ছড়ায় ।চাদরের ভাঁজে ভাঁজে গোপন উদ্দাম খেলার
সুরভি বিলায়।অনাদরে ছুঁড়ে ফেলা বালিশগুলো
অদূরে অপলকে চেয়ে রয়।দিনের সবুজ কাপড় ছেড়ে
চৈতী পূরনিমায়।মনে হয় রূপালী ঘোমটা দিয়ে
প্রেয়শী ইশারায়, ডাকে মোরে কাছে আয়, কাছে আয় ।
ধরনীর চাঁদ হাসে নরম গালিচায়।
ম্যাল, ১১/৪/১৯৮৩

সাধ

পৃ্তহিবী তোমার যত উপাচার রেখেছো সাজায়ে যতনে।
সুরের মায়ায় বন্দিনী হায় কবিতা আর গানে গানে ।।
ধরিতে যাই যাহারে, হাজার হাতের বাহারে
লুকায় চকিত হরিনী চরনে করুনার আঁখি হেনে ।।
জোনাক জ্বলা আঁধার নিশি বারে বারে ভুলি পথের দিশি
কিছু রাখো নি আমা লাগি তব করুনা আজ ভিক্ষা মাগি
আমারও সাধ ছিল ছোট মনে মাতিব নব নব গানে।।
ম্যাল, ১০//৪/১৯৮৩

পূজা

হে চির সুন্দর শ্যাম নটবর জীবন মরন সাথী ।
নানারূপে হেরি বুঝিতে না পারি পূজিতে নারি হে নিতি ।।
তব অসীম করুনা ধারা যেন শ্রাবন বাঁধন হারা
সিক্ত করিছে দেহ-তনু-মন অনুক্ষন দিবারাতি ।।
বাজাও তোমার বাঁশরীর সুর
ঝঙ্কৃত হোক চরন নুপুর
যেন জনম মরনে তোমার বন্দনা গানে
আমি-হারা হয়ে লুটাতে পারি হে দিও তেমনি শকতি ।।
ম্যাল, ১০/৪/১৯৮৩

ফুল মেলা

গুলবাগে আজ ফুলের আসর গোলাপ চামেলী যুঁথি ।
মল্লিকা টগর শেফালীর সাথে আনন্দে উঠিছে মাতি ।।
চপলা মলয়া বায়ে পিঁউ পিক ওঠে গেয়ে
জোছনা আবীরে অধীরা পুলকে আজি এ মধুর রাতি ।।
খুশীর এ ঝরনা তলায়, মন চোর
কেন এলো না সেই কালো ভ্রমর ?
যাহার লাগিয়া আজি বরন মালায় সাজি
এসেছি হেথায় সে কোথায় সে কোথায় ? বিলাপ উঠিল মাতি।।
ম্যাল। ১০/৪/১৯৮৩

মরন

তোমারে রোধিতে নারি হে মরন শ্যামল সুন্দর ।
পরশে তোমার শান্তির নীর সিক্ত করো হে অন্তর।।
বিভেদের বিষ জ্বালা সৃষটি বেদন ডালা
শীতল কঠোর নিরমেহ হাতে করো সব একাকার ।।
স্বেচ্ছাচারী দুরবিনীত নিরমম
অজেয় অরোধ্য ঘুচাও মোহ-ভ্রম
শ্রান্তি লভিতে তোমার কোলে পল্পল ছুটি দলে দলে
চির রহস্য আঁধারে ঢাকা তোমার নিত্য অভিসার ।।
ম্যাল, ১০/৪/১৯৮৩

আশা

যদি এ জীবনে হায় দেখা নাহি হয় পরিচিত বন্ধু যত ।
তোমাদের সভায় আমি ছিনু হায় অনাদৃত অনাহুত ।।
লাজ রাঙ্গা নত মূখী দিত আঁখি উঁকি ঝুঁকি
সাগরের গভীরতা ভাষাহীন নীরবতা আমার হৃদয়ে বাজিত ।।
প্রকাশের বেদনাতে দিবস যামী
সজল নয়নে পথ চেয়ে আমি
[তার] বিদায় বাসর ঘরে আলো নয় ধূপহারে
স্মরিও আমারে যদি মনে পড়ে আত্মীয় জনের মত ।।
ম্যাল, ৯/৪/১৯৮৩

রবো না

আমি রবো না এই ভাবনা মোরে নিয়ত দহন করে ।
আলো হাসি গান জীবন কলতান ডুবিবে নীরব আঁধারে ।।
চেনা অচেনা ভূবনে [আমি] রহিব একাকী গোপনে
কোন বস্মরনের মহা তমসায় কোন নিরজন কারাগারে ।।
অপূওরন মোর খেয়ালী বাসনা
কারো হৃদয়ে দীপ জ্বালিবে না
প্রেম ভালবাসা যত ঝরা বকুলের মত
উদাসী ধূলায় সকলি শুকায় আমি কাঁদিব বেহাগ সুরে ।।
ম্যাল, ৯।৪।১৯৮৩

য়াশা

ছিলাম যখন নিদ্রা মগন পুলক আবেশে ভরে ।
স্মৃতির পরাগ চিত গুলবাগ মথিত মিলন ভারে ।।
নিঃশব্দ চরন ফেলে গিয়েছ সুদূরে চলে
দেখিনু জাগিয়া রয়েছি পড়িয়া একেলা বাসর ঘরে ।।
তোমার পায়ের পরশ মাখিয়া
ফুটেছে চাঁপা মল্লিকা কেয়া
প্রকৃ্তি সমভার হয়ে তব উপাচার
প্রহর গুনিছে অসীম তিয়াসে [তুমি] আসিবে আবার ফিরে ।।
মাল, ৯/৪/১৯৮৩

বিরহ

সরম আর ভয়ের পাঁপড়ি সহসা ফেলেছি খুলিয়া ।
অনুক্ষন সেই মধু গুঞ্জন প্রভাত বেলায় শুনিয়া ।।
উদাসী দখিনা বায় কেঁদে ফেরে বেদনায়
বিফল আশায় রহিয়া হেথায় আভিমানে গেছে ফিরিয়া ।।
নিবেদনের মালা গাঁরহি অঞ্চল তলে
কত স্বপন এঁকেছি অনুরাগ কাঁজলে
হিয়া নিঙ্গাড়ি গোপনে [আমি]এসেছি চঞ্চল চরনে
শূন্য কাননে রহি কেমনে বঁ্ধূয়া আঁখি ভরে ওঠে কাঁদিয়া ।।
মাল,৯/৪/১৯৮৩

জেগে দেখি

বঁধূয়া তোমার ঘুম ভাঙ্গানো সেই মধুর তান।
শুনেছিনু আঁধো রাতে যবে ঘুমে অচেতন ।।
চেনা অচেনার কুয়াশা ঝালর
অস্ফুট পাঁপড়ি্র সারাতনু আবেশে উচাটন ।।
সরম জড়ানো সেই চপল মন
নিশীথ আঁধারে ঝরিল কখন
জেগে দেখি হায় পড়িয়া ধুলায়
চির শ্যামল কিশোর গেছে ছাড়ি আমার অঙ্গন ।।
মাল, ৮/৪/১৯৮৩

Thursday, June 3, 2010

সম্ভাবনা

একগুচ্ছ সতেজ ফুল আর মিস্টি কথার আতশ বাজী নয়-
আমাকে অভিসিক্ত করতে দরকার একটা মাটির প্রদীপ।
আমার মিথ্যা অহমিকার জঞ্জাল, মূরখ বিজ্ঞতার রঙ্গিন জামা,
বন্ধ্যা কল্পনার রিকেটী শিশুরা আর দূরবোধ্য শব্দ পাথর;
ওদের চিতার আগুনে জন্ম হোক সব্যসাচী পারথ সারথী।
অবুঝ আদর আর সোহাগ ডোরে, রেখো না পঙ্গু অলস করে।
নিরমম শুকনো মাটির লম্বা পথ একেলা চলতে হবে তার।
ওর কুস্ট ক্ষত বিভীতস শরীর স্নেহের নরম আঁচল দিয়ে,
প্রকাশ্য রাজপথে – ব্লো আর কত কাল, বিবস্ত্রা হয়ে
রাখবে ঢেকে ? কালের আরশী হয়ে ভেঙ্গে দাও
অসার মোহের চাতুরী, অবিশ্বাসী জটিল আর উদাসীন
মাটির কঠিন শয্যায়, শৈব্যার মত আমায় শুইয়ে দাও
সত্য দরশী আগুন হাতে।আঘাতে রক্ত গোলাপ ফুটুক
কুমারী হৃদয় বাগে।মৃত্যুর নিরমেহ শাসনে হোক
সব ভ্রান্তি শান্তি অবসান।
ধূলি ঝেড়ে নতুন জীবন পেয়ে যদি জেগে উঠি আরবার,
দু ফোঁটা চোখের জলে, তখনই দিও তার পুরস্কার।
আজ তার অভিশেক নয় বন্ধু আজ মরন উতসব,
কলঙ্কিত মৃত্যুর ওপারে শোনো নতুন জীবনের কলরব।
তোমারই হাতে বন্ধু সেই যাদুওকরী দন্ড, জন্ম মৃত্যুর চাবিকাঠি।
অনুক্ষন অজানা সম্ভাওবনায় আমি কেঁপে কেপে উঠি ।।
মাল। ২৯/৩/১৯৮৩

পূজা

[পূজার নরম বেদীতে বসে দেবতা কাদে নীরবে]
শুকনো স্তুতি আর কৃপন উপাচারে বাসনার ব্যাক্টেরিয়া
কিলবিল করে। ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে হাজার বুভূক্ষু মুখ
ধেয়ে আসে চারিদিকে আশায় উন্মুখ। বঞ্চিত দেবতা তাই
পূজার বেদীতে কাঁদিয়া ব্যাকুল হয় নীরবে নিভৃতে ।
দারিদ্রেরও স্থান আছে স্বান্তনা পেতে ; বঞ্চনার অধিকার
সে পারে না দিতে অন্য জনে প্রান পনে যতই প্রয়াসী ।
ভোগ আর ঐশ্বরযের অন্ধ-মোহ নাশি
লোভের সামগ্রী বিলায় সিংহাসনে বসি ;
নিস্করুন এ প্রহসনে ক্লান্ত অবিনাশী ।
নিরাপদ দূরত্বে প্রশান্তির আভা ফোটে পূজারীর মুখে।
রিক্ত এ পত্র পূটে আনন্দ জানহবী বহে বাসন্তী সুরে,
হিন্দোলের দোলা জাগে দেহতট ঘিরে।
স্বপ্নের জাল বুনি বসিয়া একা, নিবেদনের
ডালি ভরি রঙ্গিন মালিকা। ভালবাসার নিরমল মধুর সৌরভ
যেথা আঁধার ম্লান পাবার গৌ্রব ।ভালবেসে মরন ভালো
জীবন উচ্ছ্বাস হায়, ভালবাসা পেয়েপেয়ে সকলি শুকায়।
নিজেকে উজাড় করে দেউলিয়া হয়ে
বাঁচিতে চাহি আমি সবার হৃদয়ে।
মাল, ২৮/৩/১৯৮৩

নতুন ঠিকানা

জন্ম সূত্রে দুরবল ও অসহায় মানব সন্তান,
অপক্ক বয়স্কদের অতি গানিতিক অক্টোপাশে
আজ বন্দী। বরতমান উপোসী, চির অনাগত
ভবিস্যতের সোনালী স্বপ্নে ; অথচ সেতু বন্ধনের
সহজ মাধ্যম জানা নেই।
আগাছায় আকীরন শুভেচ্ছার বাগান
পরিমিতি বোধের অভাবে। পান্দিত্যের শুস্ক
কংকালে অবলুপ্ত প্রকৃ্তির সরল শিক্ষন ।
পৃ্থ্বী আজ বেপথুর অন্ধ হট্টমেলা।
এসো ফিরে দেখি, ফিরে ফিরে দেখি
আজন্ম করমের বিচিত্র সে ঝুলি,
হয়তো মিলবে সেথা, পথ চলার নতুন ঠিকানা ।
কুচবিহার, ৮/৪/১৯৯২

চেয়ে থাকা

ীক আকাশ কান্নার মেঘ নিয়ে আমার বুকে ।
ঘুরিয়া মরি আমি উদাসী বাতাসে বঁধু চারিদিকে ।।
পরশিয়া দেহলতা অবশ আবেশে
গলিয়া ঝরিতে চাই চির নিঃশেষে
গড়িয়া অশ্রু নদী নিরবধি ও নিঠুর বুকে।।
খেয়ালী বাতাসে যারে চির দিন রেখেছো দূরে
আজ শ্রাবন বেলা শেষে ডাকবে না আপন করে ?
[তবে] সাগরের স্বপ্ন নিয়ে নীরবে একেলা,
আকাশ নীলিমায় শুরু পথ চলা,
আমি অপলকে রবো চেয়ে অসীম দূর থেকে ।।
৯/১১/১৯৮১

সহসা

এক ঝাঁক সাদা বক মেলে দিয়ে দুটি পাখা ।
খুশীর দখিনা বায় সোনালী স্বপন মাখা ।।
কোলাহলে কলোরবে কখনও বা নীরবে
দিবস যামিনী ছিল প্রানের আবীরে ঢাকা।।
সহসা বিষের তীর বিঁধিল বুকের মাঝে,
পাগলা বৈশাখী ঝড়ে কোন ঘরে ফেরা সাঁঝে,
গহীন বন তলে বেদনায় পড়ে ঢলে
রক্তের আঁখরে লিখে হৃদয়ের যত ছবি আঁকা ।।
২৭/১০/১৯৮১

ভাবনা

আজ কৃষ্ণ চুড়ার কাঁপন জাগে মাতাল অলক পুরে।
পাষান কারার ভাঙ্গলো ঘুম রাখালীয়ার সুরে।।
কালো দীঘির অতল জলে বিজুলী চমকেশিহর তুলে
যেন নিঃশেষে মরবে বলে হরষে ঝাঁপিয়ে পড়ে ।।
আজ মলয়া সাথে মিতালী করি লুটায়ে এলোকেশ,
চাঁদের মুখে শ্রাবন মেঘের ভাবনা নিরুদ্দেশ
মৃ্নাল বাহুর সজল পরশে লুকো চুরি খেলা মনের হরষে
রাম ধনু ছবি আঁকিয়া আবাশে বারে বারে যায় সরে ।।
২৭/১০১৯৮১

আবেদন

বঁধুয়া তোমার হাজার নিশি প্রদীপ থেকে আমায় একটি দিও।
ভালবাসার রঙ্গিন সুতো অনুরাগের আগুনে জ্বেলে দিও।।
স্মৃতি সূধায় সারাটি জীবন ভরবে আমার দেহ তনু কন
ডালা ভরা ফুল তোমারি থাক [কোন] ঝরা ফুল শুধু দিও।।
একটি সে রাতের নিত্য বাসর সাজাবো লো প্রিয়া আমি,
একটি পরাগে হাজার কুঁড়ির হৃদয় যাবো লো চুমি,
আজলেই যদি তৃষ্ণা মেটে কি হবে বলো সাগর পুটে
তোমার অথৈ করুনা হৃদয় থেকে এক ফোটা জল দিও।।
২৫/১০/১৯৮১

পুরনিমা-মুখ

তোমার মুখে পূরনিমা দেখেছি তাই দূরের চাঁদ আমি দেখি না ।
আঁখির কোনে কোনে অতল জল সাগর সঙ্গমে কভূ ভাসি না ।।
প্রজাপতি ভ্রু দুটি বেলাভূমে পড়ে লূটি
এলোচুলে কালো মেজগের খেলায় বৈশাখী আকাশ হলো আয়না ।।
পাহাড় চূড়ায় আমি মানস খুঁযে পেয়েছি
মরন তুষার গলে জীবন ছন্দ দেখেছি
বাহিরের পৃ্তহিবী সে তো তোমারই ছবি
সব কিছু তুমিময় ওগো অপরূপা এ দেখার আশা মেটে না।।
২২/১০/১৯৮১

Wednesday, June 2, 2010

বেহাগ সুর

মলয় হাওয়া কেন জ্বলে বিরহ অনলে।
বরষায় ময়ূরী আঁখি ভরে ওঠে জলে।
শরতের সাদা মেঘে কেন বিজুলী চমকে
কেন ঝরা পাতায় শিশির ঝরে নিশির বন তলে ?
লজ্জা সিন্দুর মেঘে ঢেকে মুখ আঁচলে
ভীরু পায়ে ঊষা কেন নিদাঘে বিশ ঢালে
কেন চাঁদের হাসিতে মাখা বিষাদ কালিতে
মোহন বাঁশীতে কেন বেহাগ সুর তোলে ?
২০/১০/১৯৮১

দ্বীপ

জানি না কখন আমি দ্বীপ হয়ে গেলাম।
সব আশা ভালবাসা কখন হারালাম ।।
মরমরে কেঁদে ফেরে বরনালী সুরে সুরে
ডাহুক পরান ভরে – শুধু গাহিলাম-
বঁধুয়ার জল ছবি চোখের জলে আঁকিলাম ।।
হাজার আশার ঢেউ হাসির মুকুতা নিয়ে,
ভেঙ্গে পড়ে নিরাশায় পাষান হৃদয় ছুঁয়ে,
মিলন পিয়াস লয়ে দুটি হাত বাড়ায়ে
গোপন ইশারায় হায় – কতবার ডাকলাম
দোসর খুঁজে একা নিশি পোহালাম//
১৯/১০/১৯৮১

কাছে

দূরের পাহাড় সবুজে ধেরা তাই তোমাকে রেখেছি দূরে।
মিলনে বিরহের বেদনা বাজে তাই কাঁদে বাঁশী বেহাগ সুরে।।
স্মৃতি যেন কাঁটা হয়ে রাঙ্গায় না রক্ত দিয়ে
শুধু অনুওভবে আছো হৃদয়ে আছো সকল অনফ জুড়ে।।
ভয় হয় পিছে খুঁজে পাই কোন অকরুন কঠিন শিলা,
শোহাগ আবীরে ঢেলে দিই ভুলে অভেলার বিষ জ্বালা,
যদি পরশিয়া অঙ্গ হয় সব আশা ভঙ্গ
রঙ্গনা মঞ্জরী মাঝে ত্রিভং ফনী চুমি যায় ললাত পুরে।।
১৯/১০/১৯৮১

ছবি

রক্তের আখরে লেখা যে নাম তোমার।
রয়েছে হৃদয়ে আঁকা বঁ্ধুয়া আমার।।
কেন তারে চোখের জলে মিছে অভিমান ছলে
মুছিতে বলো আমায় বঁ্ধু বারবার ।।
যে ফাগুন আগুনে পোঁড়ে বকুল পলাশ,
বরশ বরষা ধারায় ফোঁতে চন্দ্র হাস ?
যদি সুখ পাই ওই নামে মরনে বরি,
বলো কি বা ক্ষতি তায় ওগো সহচরী?
[আমার] পোঁড়ার সে অধিকার নিও না কেড়ে মিনতি আমার,
ঝরা ফুলের বুকে থাক শুধু ছবি রাঙ্গা পা-র।।

ওপেক্ষা

আমার রাধা নামে সাধা বাঁশী ।
ডাহুক সুরে কাঁদিয়া মরে একেলা অহরনিশি।।
বিরহ আগুনে পুড়ে আমার সকল অঙ্গ জুড়ে
কালো বিষের দহন জ্বলন অবিরাম দিবানিশি ।।
ওই নুপুরের ধ্বনি কি মাধুরী আনে,
শ্রাবন ধারা শেষে নীল আকাশ হাসে বুঝিবে কেমনে,
তোমার বুক ভরা দীরঘ শ্বাস বাঁশরীর সুর হয়ে ভরে আকাশ,
কান্নার সুখ লাগি যমুনা কুলে তাই চাতক হৃদয় নিয়ে রহি বসি।।

১৫/১১/১৯৮১
অপেক্ষা

খুশী

তোমারই ছবি হয়ে সবুজ লিপিকা দাঁড়ালে সমুখে হাসিয়া।
{আমার} অভিমানের কালো মেঘ আশ্রু হয়ে যায় ঝরিয়া।
বুকে তায় রাখি ধরি আদরে সোহাগে ভরি
কত না বাসর গড়ি সোনালী স্বপনে নিশিদিন যায় কাটিয়া।
নিষেধের সীমা হেলায় দলিয়া খুশীর হাওয়ায় ভেসে
হারিয়ে যেতে নেই যে মানা রঙ ধনু আঁকা দেশে,
ভাঙ্গা গড়া নতুন খেলা কাটে আমার সারা বেলা
নব রসের সাধের ভেলা আমার মাতোয়ারা হলো নাচিয়া।

১১/১১/ ১৯৮১

বলো না

না না বলো না;
আমার দুয়ারে নিশির আঁধারে
প্রদীপ হয়ে জ্বলবে না ।
সৌ্রভে গৌ্রবে গরবী করিয়া
অনুরাগ রাঙ্গা পরাগে মাখিয়া
আঁধো মেলি আঁখি সখি সূরয্যমুখি
কোন্দিন আর ফুটবে না ।
দূরের তারা হয়ে সময় নদী বেয়ে
রবে তুমি দাঁড়িয়ে দূরে
আমার হিয়া মাঝে নিত্য সকাল সাঁঝে
বাজবে না গানের সুরে
জীবন প্রভাতে ঊষার আলোয় ভরিয়া আমার সারাটি হৃদয়
কালো মেঘে তারে শুধু বারে বারে
হাসি রাশি আর চেও না।

চিঠি

রক্তাক্ত হৃদয় খানি লিপিকা করে
সবুজ মেঝে আমি উড়িয়ে দিলাম।
পাও যদি কোন দিন মনে করো
আহত পাখীর এক সামনে এলাম ।
ক্লান্ত সে ডানাটিরে পারো যদি মেলো ধরে
সোহাগ আদরে তারে বুকের কাছে
বাঁধিয়া রেখো পিয়া জনম জনম ।
সাথী হারা পথ চলা একা একা সারা বেলা
অভিমান যত জ্বালা কথা সুরে গাঁথি মালা
সবি সই তোমা স্মরি নিও পিয় তাহে বরি
না বলার বেদনা যত রক্ত হয়ে খোলা তব বাতায়নে ঝরে গেলাম।
আলিপুরদুয়ার, ২৯/৫/১৯৮৩

জল ভরা

কে যেন সই কানে কানে কহিল “চঞ্চল” যাসনে
যাসনে এখন ভরতে জল।
সাঁঝের বেলায় যমুনা স্মৃতির ভারে আনমনা
দিন গোনায় মন বিষাদ বিভোল ।
ঘুমিয়ে আছে আকাশে চাঁদ তন্দ্রা হারা নিশি জাগি,
ঝরা বকুলে শিশির দোলে ক্লান্তির সুবাস মাখি
বন্দ করি সকল দুয়ার পাষানী আজ বন্দী ওপার
রইতে দে সই একেল বিরল।
গাগরী তোর নাই হোল আজ মিলনের আনন্দে ভরা,
মিছেই কেন হোস উতলা {সে} আপনি আসি দেবে ধরা
বিষাদ ঘন আঁধার নিশি শেষ হবে সই শুনলে বাঁশী
তনু মন করবে টলমল।
আলিপুরদুয়ার,৭/৫/১৯৮৩

জোয়ার ভাঁটা

সময়ের জোঁয়ার ভাটায়
মোর ছোট্ট তরী যায় ভেসে যায়
কোন সে কুলে কে জানে।
আঁকা বাঁকা পথের ধাঁধাঁয় অলস চরন কার পানে ধায়
কোন সে বঁধূর আবাহনে।
কারে চাহি মোর আঁখির পাতা কাজল মাঘের সুরমা পরে
পদ্ম পাতার অধর ঘিরে তৃ্তীয়া চাসিডি লুটিয়ে পড়ে
বিদেশী কোন দূরের প্রিয়া টানে আমার উদাস হিয়া
গোপন প্রেমের বন্ধনে।
আলিপুরদুয়ার, ৬/৫/১৯৮৩

ধূম পান

নিকোটিন দুষট লম্বা বিকলাঙ্গের মিছিল দেখে ভাবি-
এবার ছেড়ে দেবো ধুমপান করা।
তামাটে গোঁফের নীচে বিজয়ী হাসি।
ঠোঁট কাঁটা, গলা গরত, অরধ-পা,শূন্য-বুক,
গলিত হাত, ক্ষয়িত বিভীতস অঙ্গের ছবির সামনে দাঁড়িয়ে,
ছুঁড়ে দিই বিষাক্ত প্যাকেট। আমার বিস্বাস-
অস্তিত্ব-স্বপ্নের বিলুপ্তি আর প্রত্যক্ষ করবো না,
দরশন হবে না ধোঁইয়ার মাঝে সৃষটি-স্থিতি- প্রলয়ের
বিচিত্র লীলা,এ সব ভাবতেও কান্না পায়।
দুটো হাঁড় আত কয়েক টিকরো মাংসের বিনিময়ে
অমূল্য কল্পনাকে ধরতে হাঁতড়ে বেড়াই
সেই সরবনাশীর খোঁজে।
মাল১৮/৩/১৯৮৩

বরশা শেষে

প্রতিটি বরষা শেষে, কুমারী পৃ্থিবীর বুকে
জীবনের স্বপ্ন বোনে গভীর আনন্দে- সারাটি দিন।
দিনের আলোর সাথে, ঝিম ধরা পা ফেলে
ফিরে চলে – গঘ প্রাঙ্গন ।
মাটির প্রদীপ জ্বেলে, তুলসী মঞ্চ তলে
যেথায় প্রিয়ার আঁখি দুটি শুক তারা হয়ে রয় ।
সোনার ধানের শিষে, চাঁদ তারা হেসে হেসে
কত কথা কত গান বলে যাইয় ঝরনা ধারায় ।
চাষীর হৃদয় পটে, খুশীর জোয়ার ওঠে
মুখরিত গৃহকোন নতুন আশার ফুলে ফলে ।

অন্য অরথ

একটু আদর দিলেই লোভী কুকুরের মত
জিভ জলে ভরে ওঠে, স্নায়ুতে আনন্দের শিহরন।
ক্ষনস্থায়ী সেই অনুভুতির উনুনে –
আমার উপেক্ষা আর ঘৃনার হাজার ক্ষত শুকিয়ে নিয়ে-
জেগে উঠি, ঠিক শীত শেষে বিধবা কৃষ্ণ চূড়ার মত।
আঘাতের অন্য অরথ খুঁজি
যেহেতু সব সৃষটি বেদনায় রাঙ্গানো।
মাল, ১৫/২/১৯৮৩

Tuesday, June 1, 2010

নিরালম্ব শেওলার মত জোঁইয়ার ভাঁটায়
ঘুরে ফিরে যাওয়া আসা একই ঠিকানায়
এই উদাসী মাটির বুকে ।
অস্তিত্বের শিকড়গুলো খুঁজে ফেরে অচেনা অন্ধকারে
চারিধারে এক ফালি নরম ঠাই ।
শানিত ঐক্যতানে ওঠে গেয়ে, জমাট তন্দ্রিমার তনু বেয়ে
নাই পথিক ওরে নাই।
শতাব্দীর বঞ্চনার নিঠুর আঘাতে
আমরাও ভুলে গেছি দিতে আর নিতে
যত সাম্যের গান।

আধুনিক কবিতা

কবিতার আধুনিকতা অথবা আধুনিকতার কবিতা-
বিঝতে না বুঝতেই মহান বিপ্লব হয়ে গেল,
যেমন পঞ্জিকার জল অথবা বন্ধ্যা মাটির কোলে
সবুজ ফসল । গরভিনী শব্দ কোষে কথার শিশুরা সব
রূপ বদলায় প্রতিক্ষনে কোন জৈবিক নিয়মে।
সুরয্যল কবিতার প্রান- বিচিত্র জীবন,
ভাবনা জারকে সিক্ত নিঃসঙ্গ বিফল প্রয়াস,
বাকী সব সম্ভাবনার ইতিহাস ।
দুরবোধ্য পাথুরে গলি ভরা ভয়ের মুখোশ
আর সাদা ভয়েলে আঁকা রঙ্গিন যৌবন !
প্রানের সহজিয়া পরশ কোথাও পাই না খুঁজে,
মতস্য চোখে ব্যঙ্গ করে, আমার প্রজ্ঞা্য,
তবু মেনে নিতে হয়,
ওরা কবিতার কোন প্রজন্ম,
ভুলে ভরা স্বপ্নের বীজ।
শলাকাটি ৯/২/১৯৮৩

সুখে থাক বাছারা

সুখে থাক বাছারা আমার !
ভয়ারত জন্তুর মত পিছু হটে,
মৃত্যুর শানিত ছুরির উপর ওরা ধুঁকছে।
পিছনে অসীম শুন্যতা দোল খায় বাঁদুড়ের মত।
ওরা শাআন্তি খোঁজে বিবস্ত্র লেপের অন্ধকারে শরীরের ভাঁজে
আর বিফলতার নকশা আঁকে পাঁজড়ের হাড়ে ।
লজ্জাবতী বনিতার সলাজ ইঙ্গিতে স্বেচ্ছা বন্দী কংস-কপাটে।
তবু ওরা স্বপ্ন দেখে
পাশব-মৈ্থুনে কোন কৃষ্ণ-ভ্রুন
সোনালী প্রতীক্ষার তন্দ্রা ওদের চোখে ।
ওরা সব শব হয়ে গেছে-তবু
বাছারা আমার থাক সুখে ।
আলিপুরদুয়ার, ২/২/১৯৮২

ভাটির টান

আমার আশার আলো গেছে নিভে দেহে ভাঁটির টান ।
এই অবেলায় বলিস না সই তরী বাইতে উজান ।
ছিল যখন মধু মাস নিঠুর শ্যাম রইল উদাস
তার আসা পথ চেয়ে চেয়ে নামতো ভরা বান ।
গন্ধে মাতাল হরিনীর মত শ্যাম কুঞ্জে অবিরত,
পরাগ আবীরে সে পথ রাঙ্গিয়েছি দিন রাত,
এলো যখন বিদায় লগন কেন হানিলি বাঁকা নয়ন
মরা গাঙ্গে ভরা জোয়ার সই সহে না পরান ।
মাল, ১২/৩/ ১৯৮৩

কেন

পাথর কাঁটা কে ছড়ালো অভিসারের পথের পরে ?
কে জড়ালো আঁধার-আঁচল চন্দ্র-মুখীর নয়ন ঘিরে ?
কার আঁখি জল করেছে পিছল চঞ্চল চরন করে টলমল
নিথর হলো সমীরন হায় কোন বিরহীর হাহাকারে ?
সঙ্গশয় কেন পিছু টানে ভয় কেন আজ কালো মুখে
আঁকা বাঁকা সেই পথের বাঁকে অচেনা আজানা ছবি আঁকে
প্রদীপ জ্বালানো বাসর ঘরে ভরালো কে বিষাদ আঁধারে
বলো বলো সই কোন অপরাধে একেলা রহিবে পড়ে ?
আলিপুরদুয়ার, ৬/৫/১৯৮৩

মিলন

মিলনের স্বপ্ন জাগে তাই গোলাপ কুঁড়ি আঁখি মেলে।
বিরহের অবসানে চন্দ্রকলা হাসে গগন তলে।
যত সুখ যত আশা গহীন অন্তরে
ভাদরের নদী বুকে তরঙ্গে নাচেরে
অশ্রুর অঞ্জলি ভরে সব ব্যথা মেঘ দলে রাখে পদতলে ।
নিশিথীনির আঁচল খুলে পরায়ে দিলে মিলন হার,
সরম রাঙ্গা অরুন আলোয় রাঙ্গালো মুখ নতুন ঊষার,
আমার পৃ্থ্বী আজ অনুরাগে ফাগে
জানিনা কারে স্মরিয়া গাহে পূরবী রাগে,
কোন বঁধূ কোন কুতুহলে আমার এ ঘুম ঘোর ভাঙ্গায় অকালে।
আলিপুরদুয়ার, ৫/৫/১৯৮৩

প্রতিদান

যে হাতে গোলাপ তুলে পরালে বঁ্ধূর গলে
জানি হাতে মিশে রয় সুবাস মদির।
মোরে ভালোবাসো বলে তুমি আরো ভালো হলে
নইলে মন্দ ভালোর তফাত কিসের ?
যে হাসি ছড়া্য আলো বলয়ে উজল হলো
দুজনের অন্তর হতে দূরে যায় দুঃখ আঁধার।
ভালবাসার ছোঁয়া লেগে জীবন আবার উঠলো জেগে
আশার অরুন কিরন মেখে যাক না ভেসে এ পারাবার।

আলিপুরদুয়ার, ৫/৫/১৯৮৩